ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারের চার আসনে ২৮ প্রার্থী: কে কোন প্রতীক পেলেন

নিজস্ব প্রতিনিধি, কক্সবাজার ::  একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজারের চারটি আসনের ২৮ জন প্রার্থীর মাঝে গতকাল সোমবার প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন না পাওয়ায় কক্সবাজার-২ আসনের বিএনপি নেতা আলমগীর ফরিদ ও কক্সবাজার-৪ আসনের অ্যাডভোকেট সালাহউদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতবদিয়া) আসনে ২৩ দলীয় জোটের প্রার্থী জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেও তা বিধিসম্মত না হওয়ায় তাকে অন্য প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করায় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। এদিকে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেন কক্সবাজারের চারটি আসনে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। প্রতীক বরাদ্দকালে কক্সবাজার-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী বিএনপি নেতা আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ ফরিদ ও কক্সবাজার-৪ আসনের অ্যাডভোকেট সালাহউদ্দিন তাদের প্রার্থিতার পক্ষে বিএনপি মহাসচিবের চূড়ান্ত মনোনয়নপত্র প্রদর্শনে ব্যর্থ হন। ফলে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। তবে কক্সবাজার-২ আসনে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেও ইতোপূর্বে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করায় বিধি অনুযায়ী তাকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়নি। এর পরিবর্তে তার পছন্দ অনুযায়ী তাকে আপেল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। হামিদুর রহমান আযাদ এ আসনের সাবেক এমপি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল। বর্তমানে তিনি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের মানহানি মামলায় কারাগারে ৩ মাসের সাজা ভোগ করছেন।
জাতীয় সংসদে আসন নং ২৯৫, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) থেকে নবম সংসদে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি পান ১ লাখ ৩ হাজার ৯৭১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. আনছারুল করিম পান ৮৬ হাজার ৯৪৪ ভোট। দশম সংসদে এ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্বিতায় নির্বাচিত হন বর্তমান এমপি আশেকউল্লাহ রফিক। তিনি এবারও নৌকার প্রার্থী। তার আপন চাচা, এ আসনের সাবেক এমপি বিএনপি নেতা আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ ফরিদ সপ্তম ও অষ্টম সংসদে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু জরুরি অবস্থাকালীন তিনি কারাগারে থাকায় নবম সংসদে দলীয় মনোনয়ন পাননি। ফলে জোটের মনোনয়ন পেয়ে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জামায়াত নেতা এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ। এ আসনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি আশেকউল্লাহ রফিক আবার বিএনপি নেতা আলমগীর ফরিদের আপন ভাতিজা। বর্তমানে এ আসনে মোট ৯ জন, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে ৮ জন, কক্সবাজার-৩ ( সদর-রামু) আসনে ৫ জন এবং কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।
(চকরিয়া-পেকুয়া)-কক্সবাজার-১  আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহম্মদের স্ত্রী সাবেক সাংসদ হাসিনা আহমেদ (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ ইলিয়াছ (লাঙ্গল), ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন প্রার্থী আলী আজগর (হাতপাখা), গণঐক্যের প্রার্থী মুহাম্মদ ফয়সাল (হারিকেন), বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম (হাতুড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএমচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা বদিউল আলম (সিংহ) ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাফর আলমের মেয়ে তানিয়া আফরিন জাফর (মটর গাড়ি-কার)।
(মহেশখালী-কুতুবদিয়া)কক্সবাজার-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ আশেকউল্লাহ রফিক (নৌকা), গণফ্রন্টের প্রার্থী ড. আনসারুল করিম (মাছ), স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ (আপেল), জাপা প্রার্থী মোহাম্মদ মোহিবুল্লাহ (লাঙ্গল), ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী আবু ইউসুফ মুহাম্মদ মনজুর আহমদ (মোমবাতি), বিকল্প ধারার প্রার্থী মেজর (অব.) শাহেদ সরওয়ার (কুলা), ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী জসীম উদ্দিন (হাতপাখা), এনডিএম’র প্রার্থী মো. শহিদুল্লাহ (হারিকেন) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউর রহমান (চেয়ার)।

(কক্সবাজার সদর ও রামু )-কক্সবাজার-৩ আসনে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল (নৌকা), ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল (ধানের শীষ), জাপা প্রার্থী মফিজুর রহমান (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ আমিন (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হাছন (টেলিভিশন)।
(উখিয়া-টেকনাফ)-কক্সবাজার-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ আব্দুর রহমান বদির স্ত্রী শাহিনা আক্তার (নৌকা), জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাস্টার এমএ মনজুর (লাঙ্গল), ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ শোয়াইব (হাতপাখা), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী রবিউল হাসান (মিনার) ও গণঐক্যের প্রার্থী সাইফুদ্দিন খালেদ (হারিকেন)।
কক্সবাজার জেলার ৪টি পৌরসভা ও ৭১ ইউনিয়নের ৫১২ ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ২০৪ জন। এরমধ্যে ৭ লাখ ৭ হাজার ৮৩১ জন পুরুষ এবং ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৭৩ জন মহিলা।

পাঠকের মতামত: